মিয়ানমারে রাতভর বিস্ফোরণ: নির্ঘুম কক্সবাজার সীমান্ত এলাকার মানুষ
বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রায় ৩০ কিলোমিটার জায়গায় রাতভর গোলাগুলি ও বিস্ফোরণ হয়েছে। এসবের শব্দে নির্ঘুম কাটিয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্তের মানুষজন।
গতকাল শনিবার রাত ৮টা থেকে শুরু হওয়া বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে আজ রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠেছে টেকনাফের হ্নীলা, পৌরসভা, টেকনাফ সদর ও সাবরাং ইউনিয়নের বসতবাড়িও।
টেকনাফের হ্নীলার ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী, টেকনাফ সদরের ইউপির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ও সাবরাং ইউপির চেয়ারম্যান নুর হোসেন এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, নাফ নদীর ওপারে টেকনাফ সীমান্ত এলাকাজুড়ে থেমে থেমে ভেসে আসছে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ। যার কারণে সীমান্তের বাসিন্দাদের আবার নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শনিবার রাত ৮টা থেকে রবিবার সকাল মংডু শহরের উত্তর ও দক্ষিণে আশেপাশের এলাকার আকাশের যুদ্ধ বিমান উড়তে দেখা গেছে। সেসব বিমান থেকে বোমাবর্ষণও করা হয়েছে সীমান্তের ওপারে। সেসব বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ টেকনাফের হ্নীলা, পৌরসভা, টেকনাফ সদর ও সাবরাং ইউনিয়ন শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত শোনা গেছে।
এই তিন চেয়ারম্যান বলেন, "প্রায় নয় মাস ধরে এলাকার মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তবে শনিবার রাত থেকে আজ রবিবার পর্যন্ত বিমান হামলার বিষয়টি খুব ভয়াবহ ছিল। এমন টানা বিস্ফোরণের শব্দ আগে শোনা যায়নি।"
হ্নীলার দমদমিয়া এলাকায় বাসিন্দা আমানুল্লাহ ও সাবরাং লেজিরপাড়ার আব্দুল হামিদ বলেন, "গত রাতের মতো বোমা নিক্ষেপ এর ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। বিমান দিয়ে বোমা নিক্ষেপের কারণে টেকনাফ সীমান্তের বসবাসকারী মানুষকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে। বোমার আঘাতে এবারের মানুষের ঘরবাড়ি কেঁপে উঠছে। সারারাত বোমা ও বিমানের বিকট শব্দে এপারে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।"
সীমান্ত এলাকার মানুষ জানিয়েছে, টেকনাফ, উপজেলার পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া,নাইট্যংপাড়া , পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ সহ, নাফ নদীর মোহনা সীমান্ত দিয়ে ভেসে আসছে মিয়ানমারের বিস্ফোরণের শব্দ।
টেকনাফ নাইট্যংপাড়া বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে রাতভর পর পর বিকট শব্দ ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। মনে হচ্ছে মর্টারশেল বোমার আওয়াজ।
শাহপরীরদ্বীপ বাসিন্দা মো. ইসমাইল ভোরে জানান, "মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ৫-১০ মিনিট পরপর বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে আমরা এখনো না ঘুমিয়ে বসে আছি । কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আজকে সারারাত থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছে। রাত ৯ থেকে বিকট শব্দ শুরু হয়েছে।"
এদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।