হোটেল শেরাটনের ৪০% ডিএনসিসিকে হস্তান্তরের নির্দেশ হাইকোর্টের
রাজধানীর বনানীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) জমির ওপর বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের নির্মিত হোটেল শেরাটন ভবনের ৪০ শতাংশ এক মাসের মধ্যে ডিএনসিসিকে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে আগামী এক মাসের মধ্যে আদেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলে বোরাক রিয়েল এস্টেট কর্তৃপক্ষ ও ডিএনসিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আগামী ৯ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতের জারি করা রুলের ওপর ধারাবাহিক শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে বোরাক রিয়েল এস্টেটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন, ডিএনসিসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম নীলিম এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ইমাম হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ।
বোরাক রিয়েল এস্টেটের আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন টিবিএসকে বলেন, "এর আগে আদালতের আদেশ অনুযায়ী ভবনের অংশ বন্টনে ডিএনসিসি ও বোরাক একটি লিখিত চুক্তি করেছে। যেখানে এই ভবনের ৪০ শতাংশ ডিএনসিসিকে দেওয়া হয়েছে।"
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সেই চুক্তির ড্রাফট আদালতে উপস্থাপন করলে এই আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে শুনানিতে সিটি কর্পোরেশনের আইনজীবী ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম বলেন, "বোরাকের সঙ্গে এই ভবন নির্মাণ নিয়ে আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় যতগুলো ভবন নির্মিত হয়েছে কোনোটিতেই ২২ শতাংশের বেশি সিটি কর্পোরেশন পায়নি। বোরাক থেকে এই ভবনের প্রথমাংশের ৩০ শতাংশ পেয়েছি। আর উপরের ১৫ তলা থেকে ২৮ তলা পর্যন্ত ৪০ শতাংশ চুক্তিবদ্ধ হয়েছি।"
"এছাড়া ভবনের কমন স্পেস, দোকান পাট এসব মিলিয়ে গড়ে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশের মালিকানা সিটি কর্পোরেশনের রয়েছে। এই চুক্তিতে আমরা সন্তুষ্ট। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। তারা অনুমোদন দিলেই হয়ে যায়," বলেন তিনি।
অন্যদিকে বোরাক রিয়েল এস্টেটের আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন বলেন, "যেহেতু বিষয়টি একটি সেটেলমেন্টে এসেছে। এখন কোর্টের একটা আদেশ পেলে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেব।"
কোর্টকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, "আপনাদের একটা আদেশ পেলে ২০১৫ সাল থেকে পেন্ডিং থাকা বিষয়টির সমাধান হবে।"
এসময় সিটি কর্পোরেশনের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, "তারা (বোরাক) তো দিতে প্রস্তুত। এখন আপনারা একটা ফাইনাল চুক্তি প্রস্তুত করে নিয়ে আসুন।"
'সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল' শিরোনামে গত ১ জুন জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ১১ জুন রিট করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সেই রিটের শুনানিতে আদালত রুল জারি করেন।
স্থানীয় সরকার সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।