চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নেতার দখলে ১০ কোটি টাকার সরকারি জায়গা!
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জায়গা দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে মো. রমজান আলী নামে এক ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে।
তিনি উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড কদম রসুল জাহানাবাদ এলাকায় মুন্সী মিয়ার ছেলে এবং ১ নং কদম রসুল ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ছাত্রলীগ নেতা রমজান কদমরসুল জাহানাবাদ এলাকায় (ছালেহ কার্পেট) মহাসড়কের পশ্চিম পাশের সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) অন্তত ৮ একর জায়গা দীর্ঘদিন ধরে দখল করে সেখানে দোকান, ভাড়া ঘর, ডিপো বানিয়ে তা ভাড়া দিচ্ছেন। এছাড়া সেখানে একটি পুকুরও তিনি ভরাট করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দখলকৃত জায়গায় দোকান, ভাড়া ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে লাখ টাকা ভাড়া আদায় করছেন।
সম্প্রতি সেখানে একটি গেট স্থাপন করে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও পরিবেশ দূষণমূলক কিছু কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাও সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, এ দখলদারিত্ব বজায় রাখতে রমজান আলী বেপরোয়া হয়ে একেবারে ‘সরকারি চলাচলের রাস্তার ওপর গেট তৈরি করেছেন’। নিজের ইচ্ছেমতো তিনি গেটটি খোলেন বা বন্ধ রাখেন। এতে গ্রামবাসীর চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া দখলকৃত জায়গা অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেয়ার পর সেখানে কারখানার বর্জ্য ফেলে পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই কারণে এলাকার সর্বত্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, “প্রকাশ্যে সরকারি কোটি কোটি টাকার সম্পদ দখল করে রেখেছেন রমজান। তার ওপর চলাচলের রাস্তায় গেট, সরকারি খালে মাটি ভরাট, কারখানার বর্জ্য ফেলে দূষণ ও দুর্গন্ধ ছড়ানোসহ নানাভাবে তিনি এলাকার মানুষকে অতিষ্ট করে তুলেছেন।”
এ ব্যাপারে ভাটিয়ারীর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ নাজিম উদ্দিন বলেন, “ছাত্রলীগ নেতা রমজান আলী সরকারি ৮-১০ একর জায়গা দখল করে রেখেছে। সেখানে দোকান, ডিপো, ভাড়া ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা করে লাখ লাখ টাকা আয় করছে। গ্রামের যুবকরা সম্প্রতি তার দখলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বিক্ষোভ করেছে। এ জায়গা দখলমুক্ত করার দাবি জানাচ্ছে এলাকাবাসী।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা রমজান আলী বলেন, “সেখানে সরকারি জায়গার পাশাপাশি আমার ব্যক্তিগত কিছু জায়গাও আছে। আর সরকারি জায়গা হলেও কোন সিটভুক্ত রাস্তা নেই। তাই আমি রাস্তা বন্ধ করেছি।”
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এ জায়গায় আমি কি করব, না করব তা আমার ব্যাপার। এ নিয়ে অন্য কেউ কিছু বলার কে?”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, “বিষয়টি এতোদিন আমার জানা ছিল না। এ ব্যাপারে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”