প্রশিক্ষণ থাকলে বন্ধ হৃৎপিণ্ড সচল করা সম্ভব: স্পিকার
হৃদরোগ শনাক্ত ও প্রাথমিক সেবার প্রশিক্ষণ থাকলে আক্রান্ত ব্যক্তির পাশে নির্বিকার দর্শক হতে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রাথমিক প্রশিক্ষণ থাকলে হঠাৎ বন্ধ হওয়া হৃৎপিণ্ড (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হার্ট ফেইলিউর) সচল করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় সংসদের সভাকক্ষে 'অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) প্রতিরোধ, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বিষয়ে সচেতনতা এবং সিপিআর প্রশিক্ষণ কর্মশালায়' - এমন মন্তব্য করেন স্পিকার। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পার্লামেন্টারি স্টাডিজ (বিআইপিএস) ও আইপিডিআই ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য-সহ বিআইপিএস কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। অন্যান্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, বিশেষজ্ঞ প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইপিডিআই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমদ।
কর্মশালায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, 'আমরা সারা বিশ্বে হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ করি। রোগ শনাক্ত হলে ওষুধ দিয়ে প্রতিকারের চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু এ রোগ যাতে না হয়, সেজন্য আগেই প্রতিরোধ ও প্রতিকার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে জীবনযাত্রার ধরন এবং খাদ্যাভ্যাস নিবিড়ভাবে যুক্ত। আমরা যদি হৃদরোগ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারি, তাহলে এ রোগ কমিয়ে আনা সম্ভব।'
তিনি বলেন, হঠাৎ করে আপনার আশেপাশে কেউ যদি হৃদরোগে আক্রান্ত হন, তাহলে আপনার করণীয় (প্রাথমিক প্রশিক্ষণ) জানা থাকলে একটি প্রাণ বেঁচে যেতে পারে। তাই দর্শক হয়ে দাড়িয়ে থেকে আক্রান্ত ব্যক্তির কষ্টটা না দেখে, কীভাবে তার সহায়ক হওয়া যায়– সে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ থেকে আমরা সবাই উপকৃত হব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, 'যেকোন বিষয়ে সচেতনতাই হলো বড় প্রতিরোধ। দেশে অসংক্রমক রোগ প্রতিরোধে প্রান্তিক পর্যায়ে সচেতনতা পৌঁছাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বিষয়ে সচেতনতায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।'
আইপিডিআই ফাউন্ডেশন জানায়, বিশ্বে প্রতিবছর ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। তার মধ্যে ৩ লাখ ২৪ হাজার মারা যায় কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে। কার্ডয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্তদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি মারা যান। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ১০ মিনিটের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর সিপিআর প্রয়োগ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিতে পারলে তার মৃত্যু অনিবার্য।
এই জরুরি অবস্থা মোকাবিলায়, পরিবারের সদস্য ও নিকটজনদের চিকিৎসকের ভূমিকায় অংশ নিতে হবে। সেক্ষেত্রে সবাইকে প্রথমিক করণীয় বিষয়ে প্রশিক্ষিত হতে হবে। আর সেই কাজটিই করে যাচ্ছে আইপিডিআই ফাউন্ডেশন।