হাম্পব্যাক তিমির সাথে বিজ্ঞানীদের মাত্র ২০ মিনিটের 'কথোপকথন'!
হাম্পব্যাক তিমির সাথে বিজ্ঞানীদের 'কথোপকথন'। তাও আবার প্রাণিটির নিজস্ব ভাষায়। বিষয়টি অবাক করার মতো হলেও একদল বিজ্ঞানী নজিরবিহীন ও ব্যতিক্রমী এ ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তারা প্রাণিটির নিজেদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে আরো বেশি তথ্য জানতে পেরেছেন।
চলতি বছরের শুরুতে হোয়েল-এসইটিআই (সার্চ ফর এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্স) হিসেবে পরিচিত একদল গবেষক টোয়াইন নামের একটি হাম্পব্যাক তিমির সাথে 'কথোপকথন' করেছিলেন। তাদের এ আলাপের ব্যাপ্তি ছিল ২০ মিনিট।
গবেষণাটি বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল পিয়ার জে-তে প্রকাশিত হয়েছে। এতে 'হাম্পব্যাক তিমির ভাষা' ব্যবহার করে মানুষ এবং এই তিমির মধ্যে হওয়া আলাপের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
এ গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা আগেই হাম্পব্যাক তিমির নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের কিছু শব্দ রেকর্ড করেছিলেন। সেই শব্দ বা আওয়াজ ব্যবহার করে টোয়াইনের মনযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা। আশ্চর্যজনকভাবে এ ডাকে সাড়া দেয় টোয়াইন এবং বিজ্ঞানীদের নৌকার চারপাশে ঘুরতে থাকে।
গবেষণাটির প্রধান লেখক ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. ব্রেন্ডা ম্যাকাওয়ান বলেন, হাম্পব্যাক তিমির সাথে হওয়া আলাপটি এ প্রাণির বুদ্ধিমত্তা ও তাদের জটিল যোগাযোগ ব্যবস্থার বিষয়টির প্রমাণ। মাছ ধরার জন্য বাবলের মাধ্যমে জাল তৈরি, নিজস্ব গান এবং ডাকের মাধ্যমে একে অপরের সাথে তাদের বিস্তৃত যোগাযোগ ব্যবস্থা সত্যিই চমকপ্রদ।
এই আলাপ হাম্পব্যাক তিমির নিজেদের মধ্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বোঝার পাশাপাশি 'এলিয়েদের অস্তিত্ব' খুঁজতেও সহায়ক হবে বলে ধারণা গবেষকদের।
এসইটিআই ইনস্টিটিউটের ড. লরেন্স ডোয়েল বলেন, 'প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে মহাজাগতিক প্রাণির সন্ধানের বিষয়ে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুমান হলো মহাজাগতিক জীব আগ্রহী হয়ে মানুষের রিসিভার যন্ত্রের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করবে। হাম্পব্যাক তিমির এই ঘটনাটি নিশ্চিতভাবে এ অনুমান সমর্থন করে।'
টোয়াইনের সাথে আলাপের সময়ে তিমিটির আচরণ ও জবাব দেওয়ার ধরন আরো অনেক বিষয়কে প্রভাবিত করে। এই ঘটনা থেকে গবেষকরা যেসব তথ্য-উপাত্ত পেয়েছেন, সেগুলো হাম্পব্যাক তিমির যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো ভালভাবে বোঝার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে গবেষণার জন্য সহায়ক হবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।