ছেলের দুশ্চিন্তায় কাতর অপহৃত ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুবের মা
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি 'এমভি আব্দুল্লাহ' জাহাজের ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের মা হুমায়ারা বেগম (৫৯) আহাজারি করছেন। অপহরণের খবর পেয়ে ছেলের দুশ্চিন্তায় কাতর এই বৃদ্ধ মা।
আইয়ুব খানের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালিয়া গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
গত ফেব্রুয়ারিতে তার বাবা আজহার মিয়া মারা যান। এক বছর আগে ইন্টার্নি করতে 'এমভি আব্দুল্লাহ' জাহাজে ওঠেন আইয়ুব।
আইয়ুব খানের মা হুমায়ারা বেগম বলেন, 'ছেলের সঙ্গে গত সোমবার (১১ মার্চ) বিকালে আমার শেষ কথা হয়েছে। সেদিন বলেছিল, সে ভালো আছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি তার বাবা মারা যান। কিন্তু জাহাজে থাকায় সে আসতে পারেনি। তার বাবার লাশ দেখতে পারেনি, মাটিও দিতে পারেনি।'
তিনি বলেন, 'এ নিয়ে তার মনে খুবই দুঃখ ছিল। সে বলেছিল, আমরা দুজনে মিলে তার বাবার জন্য কোরআন খতম করব।'
হুমায়ারা বেগম বলেন, 'চার ভাই-বোনের মধ্যে পরিবারের সবার ছোট আইয়ুব, তাই সবার আদরের। এক বছর হলো সে লেখাপড়া শেষ করে ইন্টার্নি করার জন্য জাহাজে যায়। তার বাবা মারা যাবার ২০-২৫ দিন আগে সে বাড়িতে আসে। এরপর আবার জাহাজে চলে যায়।'
তিনি বলেন, 'আল্লাহ যেন তাকে সুস্থাবস্থায় আমার কোলে ফিরিয়ে আনেন এই দোয়া করি। দেশবাসীর কাছেও এই দোয়া চাই।'
আইয়ুব খানের বন্ধু আবদুল্লা আল মারুফ বলেন, আমরা একসঙ্গে লেখাপড়া করেছি। সে আমার বাল্যবন্ধু। মঙ্গলবার আইয়ুব তার ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে তাদের জাহাজে জলদস্যুদের হামলার কথা লেখেন। সেখান থেকেই বিষয়টি জানতে পারি। আমার বন্ধুসহ ২৩জন বাংলাদেশি নাবিক সোমালিয়ার সশস্ত্র দস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে।'
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে জাহাজটি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজটি কয়লা নিয়ে মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। পথিমধ্যে এডেন উপসাগরে জাহাজটিতে হামলা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র জলদস্যুরা। তারা জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে রেখেছে।