কয়েক দশক নিষিদ্ধের পর ইউটিউবে হঠাৎ বৃটিশ রাজপরিবারের ডকুমেন্টারি ফাঁস
১৯৬৯ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ একটি ডকুমেন্টারি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এত বছর পর ব্রিটিশ রাজপরিবারের সাথে সম্পর্কিত সেই ডকুমেন্টটি ইউটিউবে রহস্যজনকভাবে ফাঁস হয়ে পড়েছে।
সিএনএন জানায়, ডকুমেন্টারিটির প্রতি রানীর এ নিষেধাজ্ঞার কারণ ছিল: এতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের অনেক ভেতরের অন্তঃরঙ্গ বিষয় চলে এসেছিল। রাণী চান না তা বাইরের মানুষ জানুক।
প্রথমবার যখন এটি বিবিসিতে সম্প্রচারিত হয় তখন লাখো মানুষ এই ডকুমেন্টারিতে দেখানো রাজপরিবারের অভ্যন্তরীণ দৃশ্য উপভোগ করেছে।
ভিডিওটি কীভাবে এত বছর পর ইউটিউবে আপলোড হলো তা স্পষ্ট নয়। তবে কপিরাইট বিষয়ে আপত্তি তোলার পর ইউটিউব থেকে ভিডিওটি দ্রুত সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভিডিওতে এক জায়গায় দেখা যাচ্ছে, রাজা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে গরিলার সাথে তুলনা করছেন।
"ওখানে একটা গরিলা ছিল। আমাকে অসহনীয় যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে...সে খুব একটা লম্বা-চওড়া ছিল না, তবে হাতগুলো ছিল লম্বা লম্বা।''
এছাড়াও ডকুমেন্টারিতে দেখা যায়, রাজপরিবারের সবাই একসাথে খেতে বসেছেন এবং ছয় বছরের প্রিন্স এডওয়ার্ডকে ক্যান্ডি কিনে দিতে বায়না ধরলে রানী তার পার্স খুঁজছেন। এবং রানী জিজ্ঞাসা করছেন, 'এই জঘন্য, আঠালো, নোংরা জিনিসটা নিশ্চয়ই গাড়ির ভেতরে আছে, তাইনা'?"
এটি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত যুক্তরাজ্যের সর্বাধিকবার দেখা শোগুলোর একটি । ১৯৬৯ সালে এই ১১০ মিনিট ব্যাপ্তিকালের ডকুমেন্টারিটি প্রায় ৩ কোটি লোক দেখেছিল। বিবিসি অনুমান করছে যে বিশ্বজুড়ে এটি ৩৫০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দেখেছে।
এই প্রযোজনারই সাম্প্রতিক সংযোজন যেন নেটফ্লিক্সের আলোচিত 'দ্য ক্রাউন' সিরিজটি। বরাবরের মত এখানেও রাজপরিবারের আঙ্গিনায় ক্যামেরার উপস্থিতি রাজসদস্যদের মনে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।
তবে এভাবে হঠাৎ এতদিন পরে ভিডিওটির পুনরায় আবির্ভাব নিয়ে বিবিসির মুখপাত্র কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সিএনএনকে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ জানায়, "কপিরাইটের দাবি ওঠায় আমরা ভিডিওটি তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে নিয়েছি।"
বাকিংহাম প্যালেসও মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে।
'রয়্যালস'রা নিজেদের প্রাত্যহিক জীবনে বিবিসি'কে প্রবেশাধিকার প্রদানের পরেই ছবিটি নির্মিত হয়েছিল। ষাটের দশকের সমাজ ও জীবনধারা থেকে রাজপরিবার ক্রমশ ছন্দ হারিয়ে ফেলছিল, সে সময়ের প্রাসঙ্গিকতায় ফিরে আসার একটি প্রচেষ্টা হিসেবেই এই তথ্যচিত্রের নির্মাণ।
পরবর্তীতে রানীর মেয়ে, রাজকুমারী অ্যান অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে তার অসন্তুষ্টির কথা জানান। "রাজপরিবারের ওপর ছবি নির্মাণের ধারণাটাই আমার পছন্দ নয়। আমার কাছে সবসময় এটিকে একটি বিদঘুটে ব্যাপার লেগেছে।"