তালেবান শাসনের আগে থেকেই অসুখী দেশের তালিকার শীর্ষে আফগানিস্তান
পৃথিবীর সবচেয়ে অসুখী দেশের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে আফগানিস্তান। গত বছরের আগস্টে দেশটির ক্ষমতায় তালেবান শাসকগোষ্ঠী আসার আগে থেকেই দেশটি নেতিবাচক এ অবস্থানে রয়েছে। রোববার (২০ মার্চ) জাতিসংঘের 'বিশ্ব সুখী দিবস' উপলক্ষে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১৪৯টি দেশের তথ্য নিয়ে বার্ষিক এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। মাত্র ২.৫ পয়েন্ট নিয়ে এই সারণীর সর্বনিম্নে অবস্থান করছে আফগানিস্তান। তালিকায় শেষ থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে লেবানন। তালিকায় শেষের পাঁচে আরও রয়েছে বোতসোয়ানা, রুয়ান্ডা এবং জিম্বাবুয়ে।
৭.৮ স্কোর নিয়ে চতুর্থ বারের মতো এই তালিকায় শীর্ষ সুখী দেশ হিসাবে আছে ফিনল্যান্ড। শীর্ষ পাঁচ সুখী দেশের তালিকায় আরও রয়েছে যথাক্রমে ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, আইসল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ড।
গবেষকেরা বিগত তিন বছরের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেন। জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন), সামাজিক সুরক্ষা নীতি, গড় আয়ুষ্কাল, জনসংখ্যা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা এবং দুর্নীতির নানা সূচকের ওপর নির্ভর করে এই তালিকা তৈরি করা হয়ে থাকে।
উপরোক্ত ছয়টি ক্যাটাগরির কোনোটিতেই আফগানিস্তান সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। এমনকি তালেবান শাসন ক্ষমতায় আসার আগেও আফিগানিস্তানের চিত্র এমনই ছিল। দীর্ঘ ২০ বছর যুক্তরাষ্ট্রের দখলে ছিল আফগানিস্তান। আফগানিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ইন্সপেক্টর জেনারেলের তথ্য মতে, এই দীর্ঘ সময়ে আফগানিস্তানের 'উন্নয়ন কর্মকান্ডের' জন্য কেবল ওয়াশিংটন থেকেই ১৪৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়। কিন্তু তাতেও কাঙ্খিত ফলাফল মেলেনি।
২০১৮ সালে গ্যালাপের করা জরিপে বলা হয়েছিল, খুব কম আফগান জনগণ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা করে। তবে অধিকাংশই জানিয়েছিল যে, ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের কোনো আশাই নেই। আফগানিস্তান বিগত দিনগুলোতে যুদ্ধ, দুর্নীতি, দারিদ্র্য এবং বেকারত্বের নির্মমতার সম্মুখীন হয়েছে।
গত বছরের আগস্ট মাসে আফগানিস্তানের শাসনভার গ্রহণ করে তালেবান সরকার। নতুন সরকার আসার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে আফগানিস্তানের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে পুনর্নিমাণে তাদের সরকার কাজ করছে- এমনটা উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক মহলকে নব-গঠিত সরকারকে স্বীকৃতি দিতে আহ্বান জানিয়েছে তালেবান।
- সূত্র: আল জাজিরা