কর্মক্ষেত্রে বেতন বাড়ানোর জন্য সমঝোতায় আসার ৪ উপায়
যেকোনো ব্যবসায়ে বা কর্মক্ষেত্রে দর কষাকষি করা কিংবা সমঝোতায় আসতে পারা একটি প্রধান দক্ষতার মধ্যে পড়ে। ঠিক তেমনই, একটি চাকরির প্রস্তাব গ্রহণ করার সময় অথবা কর্মক্ষেত্রে নতুন পদে প্রমোশনের সময় বেতন ঠিক করার বেলায় এই দক্ষতাটির প্রয়োজন হয়। আপনি যতটা শ্রম দিচ্ছেন, তার বিনিময়ে সঠিক পারিশ্রমিক পাচ্ছেন কিনা তা অবশ্যই নিশ্চিত করা উচিত। কিন্তু সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে বসে থাকলে চলবে না, নিজের বিচক্ষণতাও কাজে লাগাতে হবে।
গবেষণা বলছে, এক-তৃতীয়াংশ মানুষ কর্মক্ষেত্রে নিজেদের বেতন নিয়ে সঠিক দর কষাকষি করে বেতন বাড়াতে পারে। অর্থাৎ, অধিকাংশ মানুষই নিজেদের বেতন বাড়ানোর কথা কর্তৃপক্ষকে বলতে পারে না।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, নিজেদের বেতন বাড়ানোর কথা বলতে যথেষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী মানুষের ৮৪ শতাংশই শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত বেতন আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন। যারা দরাদরি করেছেন বেতন নিয়ে, তাদের এক-পঞ্চমাংশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেতন বাড়ানো হয়েছে।
একথা অস্বীকার করা যাবে না যে, বসের সাথে বেতন বাড়ানোর জন্য দর কষাকষি করাটা বেশ কঠিন ও চিন্তার একটি ব্যাপার। কিন্তু যদি এ বিষয়ে সঠিকভাবে এগোনো যায় এবং যৌক্তিক শর্তাবলি আরোপ করা যায়, তাহলে বেতন বাড়ানোর জন্য এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়।
কিন্তু কর্মক্ষেত্রে বসদের কাছে কিভাবে প্রমাণ করবেন যে আপনি আসলেই বেতন বাড়ানোর উপযুক্ত এবং কিভাবে সেই দরাদরির প্রক্রিয়ায় সফলতা লাভ করবেন? তার জন্য অনুসরণ করতে পারেন নিচের ৪টি উপায়:
১. নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করা
যখন বসের সাথে বেতন বাড়ানোর কথা আলোচনা করতে যাবেন, আপনাকে প্রমান করতে হবে আপনার কাজ আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পরিশ্রমের ফলে প্রতিষ্ঠানের কতখানি লাভ বা আয় হয়েছে, সেটি তুলে ধরতে হবে। স্পষ্টভাবে তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে আপনি বাড়তি বেতন পাওয়ার যোগ্য।
২. নিজের মূল্য জানা
আপনি যে পদে আছেন, একই ধাচের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সেই একই পদের কর্মীদের কত টাকা বেতন দেওয়া হয় তা জানতে হবে। এক্ষেত্রে লিংকডইন স্যালারি বা ইনডিড-এর মতো প্রযুক্তির সাহায্য নিতে পারেন। তাহলে সহজেই বোঝা যাবে, কর্মক্ষেত্রে আপনি শোষিত হচ্ছেন কিনা এবং তা বসদের বোঝাতেও প্রয়োজন হবে।
৩. বসকে আগেই জানিয়ে রাখা
শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করার চাইতে অন্তত ছয় মাস আগে থেকে বসকে জানিয়ে রাখুন যে আপনি চান, আপনার বেতন বাড়ানো হোক। আর এই বেতন বাড়ানো বা প্রমোশন পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রতিষ্ঠানের কী কী লক্ষ্য পূরণ করতে হবে সে বিষয়েও সমঝোতায় আসতে হবে। কিভাবে বসের সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করছেন, এটাই মূল বিষয়। অবশ্যই বসকে ডিফেন্সিভ অবস্থানে রাখা যাবে না।
নিজের উদ্দেশ্য ও কোম্পানির লক্য্্ পূরণ, দুটি সমান্তরালে রেখে আলোচনা করতে হবে। যখন ছয় মাস প্রায় পূর্ণ হয়ে যাবে, তখন বসের সাথে আলোচনায় বসতে হবে এবং তাকে দেখাতে হবে আপনার অর্জনগুলো; যাতে করে বেতন বৃদ্ধি ও প্রমোশনের বিষয়টি তার মাথায় চলে আসে।
৪. নিজের যোগ্যতাকে ন্যায্যতা প্রদান করা
বেতন বাড়ানো বা প্রমোশনের জন্য দর কষাকষি করা, অথবা সমঝোতায় আসার সময় তৈরি হয়েই আসতে হবে যে, আপনাকে নিজের যোগ্যতাকে ন্যায্যতা দিতে হবে। অপরপক্ষ থেকে পালটা প্রশ্নের তীর ছুটে এলেও তা সামলাতে হবে এবং নিজেকে নিচে নামানো যাবে না। তা নাহলে একজন দক্ষ ম্যানেজার সহজেই আলোচনার নিয়ন্ত্রণ তার হাতে নিয়ে নেবেন এবং আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাবেন না।
সূত্র: ইনক.