ফিরেছে ৪০ শতাংশ ব্রডব্যান্ড সংযোগ, কিন্তু ধীরগতিতে দুর্ভোগ ব্যবহারকারীদের
গত ১৭ ঘণ্টায় দেশের মোট ১ কোটি ১০ লাখ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের প্রায় ৪০ শতাংশ ফিরেছে। এতথ্য জানিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)।
তবে সংযোগ পুনঃস্থাপিত হলেও, গতি নেই। এতে ব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকরা নির্বিঘ্নভাবে পাচ্ছেন না অন্তর্জালের এ সেবা। তাছাড়া, বিপুল পরিমাণ তথ্য ব্যবহার করে বাণিজ্যিক গ্রাহকরা, যেখানে আজ বিকেল পর্যন্ত ইন্টারনেটের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি বলেও জানা গেছে।
আইএসপিএবির সভাপতি মো. এমদাদুল হক অবশ্য টিবিএসকে বলেন, সব সরকারি অফিস, জরুরি পরিষেবা এবং হাসপাতাল ইন্টারনেট ফিরে পেয়েছে। এছাড়া, রাজধানীতে সরকারিভাবে চিহ্নিত অগ্রাধিকারমূলক খাতগুলোর হাব – মতিঝিল, গুলশান, বনানী, বারিধারা, ডিওএইচএস ও ক্যান্টনমেন্ট এবং কারওয়ান বাজার এলাকার – প্রায় সব সংযোগই ফিরেছে। এসব এলাকার বাসাবাড়িতেও ইন্টারনেট সেবা ফিরেছে বলে জানান তিনি।
এমদাদুলের মতে , "প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার) পাওয়া বাণিজ্যিক গ্রাহকদের প্রায় ৬০–৬৫ শতাংশ সংযোগ আমরা দিতে পেরেছি। আজ দিনের শেষে সংযোগ প্রতিস্থাপনের এই হার আরো অনেকটা বাড়বে।"
তিনি আরো বলেন, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতগুলোর যেসব প্রতিষ্ঠান– তাদের নিজস্ব খাতের হাবগুলোর বাইরে অবস্থিত– তারা নিজেদের ব্যবসায়ী সমিতিগুলোর কাছে ধর্না দিচ্ছে, যাতে সদস্যদের জরুরি ইন্টারনেট চাহিদার কথা সমিতিগুলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা– বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)- কে জানাতে পারে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত ইন্টারনেট চালু করতে স্থানীয় ইন্টারনেট পরিষেবাদাতা বা আইএসপিগুলোকে নির্দেশ দিচ্ছে বিটিআরসি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং এর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, হাবগুলোতে অবস্থিত আউটসোর্সিং ফার্মগুলোয় এরমধ্যেই ইন্টারনেট সংযোগ চালু হয়েছে। "এখন হাবের বাইরে অবস্থিত যেসব প্রতিষ্ঠান এখনো সংযোগ ফিরে পায়নি, আমরা তাদের একটি তালিকা তৈরি করছি। বিটিআরসির মাধ্যমে ওইসব এলাকার আইএসপিগুলোকে তা জানানো হবে।"
তবে ইন্টারনেটের গতি না থাকলেও– ব্রাউজিং, টেক্সট ম্যাসেজ পাঠানোর মতো সাধারণ কাজগুলো করা যাচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে টানা পাঁচদিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকার পর এতেও অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ গ্রাহকদের। তবে প্রচুর ডেটা ব্যবহারকারী লাইভ সেবা ও মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট সোর্সিং প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্টারনেটের 'স্লো স্পিডের' কারণে কার্যক্রম চালাতে সমস্যার মধ্যে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস- এর সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, "ডিজিটাল অর্থনীতিকে সচল করতে আগে সব বাণিজ্যিক গ্রাহককে কানেক্ট করা জরুরি এটা আমরাও বুঝি, কিন্তু তারপরে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর উদ্যোগও নিতে হবে।
(আইএসপিএবি)'র সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথ সক্ষমতা ৬ হাজার জিবিপিএস; তবে গুগল, ফেসবুকের স্থানীয় ক্যাশে সার্ভারগুলো পাঁচগুণ ব্যান্ডউইথ সাশ্রয়ে ভূমিকা রাখে। গুগল ও ফেসবুকের লোকাল ক্যাশে সার্ভার নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এগুলো চালু হওয়াটা অপরিহার্য।
একারণে যেসব গ্রাহকের ব্রডব্যান্ড সংযোগ ফিরেছে, তারাও সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিসগুলো ব্যবহার করতে পারছে না বলে জানান তিনি।