চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে হতে যাচ্ছে প্রথম মানহানির মামলা!
চ্যাটজিপিটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো মানহানির মামলা হতে যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত চ্যাটবটটিতে অস্ট্রেলিয়ার হেপবার্ন শায়ার শহরের মেয়র ব্রায়ান হুড সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খবর দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের।
গত বছরের নভেম্বরে এআই চ্যাটবট হিসেবে চ্যাটজিপিটি উন্মুক্ত করা হয়। অল্প সময়েই কয়েক মিলিয়ন ব্যবহারকারী প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার শুরু করেন।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিবিদ হুড জানতে পারেন, ২০০০ সালের দিকে দেশটির রিজার্ভ ব্যাংকের সহযোগী অঙ্গপ্রতিষ্ঠান 'নোট প্রিন্টিং অস্ট্রেলিয়া' এর সাথে সংশ্লিষ্ট বৈদেশিক ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলার অপরাধী হিসেবে তার নাম দেখাচ্ছে চ্যাটজিপিটি।
এদিকে মেয়রের আইনজীবীরা জানান, হুড নিজেই সেসময় মুদ্রা ছাপানোর কাজ নিয়ে বিদেশি কর্মকর্তাদের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তৎকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়নি।
অথচ চ্যাটজিপিটির দেওয়া তথ্যমতে, ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে হুড নাকি জেলও খেটেছেন! চ্যাটবটটিতে এমন ভুল তথ্য সংশোধন না করা হলে ওপেনএআই'র বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন হুড।
তিনি মামলাটি করলে এটিই হবে চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে করা বিশ্বের প্রথম মানহানির মামলা।
অস্ট্রেলিয়ায় মানহানির মামলায় সাধারণত ৪ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মতো ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।
হুডের আইনজীবী জানান, গত ২১ মার্চ ওপেনএআই'র কাছে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কোম্পানিকে ভুল তথ্য ঠিক করার জন্য ২৮ দিনের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু ওপেনএআইয়ের পক্ষ থেকে এখনও হুডের আইনি নোটিশের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি। এই প্রসঙ্গে রয়টার্সের পক্ষ থেকে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলেও ওপেনএআই থেকে সাড়া মেলেনি।
অন্যদিকে ব্রায়ান হুডের ল-ফার্ম গর্ডন লিগ্যালের অংশীদার জেমস নটন বলেন, "হুড একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি। তার সম্মানের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার সম্পর্কে এমন মিথ্যা তথ্য দেওয়া হলে সেটা নিঃসন্দেহে জনমনে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে।"
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী, ঠিক কতজন মানুষের কাছে ভুল তথ্যটি পৌঁছেছে, সে হিসেবে মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে মেয়রের সম্পর্কে এ 'অসত্য' তথ্য ঠিক কতজনের কাছে পৌঁছেছে তার সুনির্দিষ্ট হিসেব নেই।
তবে জেমস মনে করেন, অভিযোগ গুরুতর হওয়ায় হুড ২ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বেশি দাবি করতে পারেন।
এদিকে গত বুধবার ওপেনএআইয়ের পক্ষ থেকে ভুল তথ্যের বিষয়ে একটি বিস্তারিত ব্লগ প্রকাশ করা হয়েছে। ব্লগে বলা হয়, "ব্যবহারকারীরা যখন প্লাটফর্মটিতে নিবন্ধন করেন, তখনই তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, চ্যাটজিপিটির পক্ষ থেকে যে অনেকসময় ভুল তথ্যও আসতে পারে।"
ওপেন এআই আরও জানায়, তথ্যগত ভুল কমিয়ে আনতে অন্যসব চ্যাটবট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মতো চ্যাটজিপিটিও গুরুত্বসহকারে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই এ কাজে বেশ উন্নতি হয়েছে বলেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।