ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে ‘বিপুল’ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাশিয়ার
রুশ বাহিনী স্থানীয় সময় বুধবার ইউক্রেনের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৫০টিরও বেশি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিস্ফোরক ড্রোন হামলা করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটিকে 'বৃহৎ পরিসরে' হামলাকে বলে অভিহিত করেছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিয়েভ এবং দক্ষিণ ও পশ্চিমের কিছু অংশসহ ইউক্রেনের সাতটি অঞ্চলে করা বোমা হামলায় বাড়িঘর এবং দেশের রেল নেটওয়ার্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ হামলায় আট বছরের এক শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যুদ্ধের তিন বছরে রাশিয়া কয়েকবার ইউক্রেনের বিভিন্ন বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছে।
জাতীয় বৈদ্যুতিক গ্রিড অপারেটর ইউক্রেনারগো জানিয়েছে, ভিনিৎসিয়া, জাপোরিঝঝিয়া, কিরোভোহরাদ, পোলতাভা এবং ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক অঞ্চলের বিদ্যুৎ অবকাঠামোগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আঞ্চলিক গভর্নর মাকসিম কোজিৎস্কি জানিয়েছেন, লভিভ অঞ্চলে দুটি বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে আঘাত হানা হয়েছে।
ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় বেসরকারি জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডিটিইকে জানিয়েছে, হামলায় তাদের তিনটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি 'মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে'।
ডিটেক জানিয়েছে, গত ছয় সপ্তাহের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির স্থাপনা লক্ষ্য করে এটি পঞ্চম হামলা।
সামগ্রিকভাবে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে কোম্পানির বিভিন্ন অবকাঠামোগুলো প্রায় ১৮০ বার হামলা শিকার হয়েছে। এসব হামলায় ৫১ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন এবং তিনজন নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ৫৫টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ২১টি শাহেদ ড্রোন নিক্ষেপ করেছে।
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর কমান্ডার মাইকোলা ওলেশচুক জানিয়েছেন, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ৩৯টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ২০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
জাতীয় রেলওয়ে অপারেটর উকরজালিজনিৎসিয়া জানিয়েছে, রুশ বাহিনীর হামলায় খেরসনে রেলস্টেশন ভবন ও ট্রেন লাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা প্যাট্রিয়টসের মতো আরও ন্যাটো-মানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
২০২২-২৩ সালের 'ব্ল্যাকআউট উইন্টারে' ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছিল রাশিয়া।
গত মার্চ মাস থেকে ক্রেমলিন নতুন করে আক্রমণ জোরদার করে। যেমন এক হামলায় তারা কিয়েভের পার্শ্ববর্তী ট্রিপিলস্কা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। এটি দেশটির অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার তেল শোধনাগারে ইউক্রেনের দূরপাল্লার হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
আংশিকভাবে অধিকৃত লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়ার নিযুক্ত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানকার একটি তেল টার্মিনালে বুধবার ইউক্রেনের হামলায় পাঁচ শ্রমিক আহত হয়েছেন এবং অবকাঠামো আগুনে পুড়ে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেছেন, বুধবারও হামলা করা হলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপীয় লড়াইয়ের অবসান উপলক্ষে দিনটি পালন করছে ইউক্রেন।
তিনি ইউক্রেনের বর্তমান লড়াইকে সেই সংঘাতের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি