সিএসইর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হতে চায় বসুন্ধরা
চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী বা স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হতে চায় দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।
এর জন্য শিল্প গ্রুপটি ইতিমধ্যে বন্দর নগরীর শেয়ার বাজারকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও দিয়েছে। তাদের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সিএসই।
বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া প্রস্তাব-সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের হাতে এসেছে। তবে এ বিষয়ে সিএসই, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও বসুন্ধরা গ্রুপের কোনো কর্মকর্তা এখনই মন্তব্য করতে রাজি নন।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেড স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে সিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার কিনে নিতে চায়। প্রতিষ্ঠানটি সিএসইর প্রতিটি শেয়ারের জন্য ১৫ টাকা দর প্রস্তাব করেছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এবিজি লিমিটেডেরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রতিষ্ঠানটি সিএসইর সঙ্গে দেশে পণ্য বিনিময় প্রতিষ্ঠারও চেষ্টা করছে।
সূত্র জানায়, বসুন্ধরার প্রস্তাব সিএসই চলতি বছরের ১ আগস্ট বিএসইসির কাছে পাঠিয়েছে। সেই প্রস্তাবের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য চেয়ে সিএসইকে গত ১৭ আগস্ট চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।
বিএসইসির চিঠিতে এবিজি লিমিটেডের রিসোর্স, জনবল, দক্ষতা ও বিনিয়োগ সক্ষমতা নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিএসইর অনুষ্ঠিতব্য বার্ষিক সাধারণ সভায় স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার ও প্রস্তাবিত শেয়ার দরের বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে।
বুধবার এই বিষয়গুলো নিয়ে সিএসইর সঙ্গে বিএসইসির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিএসইসির নির্দেশনা যথাযথভাবে পূরণ করে সিএসই চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠাবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, বসুন্ধরার শীর্ষ কর্মকর্তারাও বিএসইসির সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন। সেখানে তারা জানান, স্টক এক্সচেঞ্জ পরিচালনায় প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তার জন্য আমেরিকাভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করছে এবিজি লিমিটেড।
আগামী সোমবার এই কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এক প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিএসইসিকে জানাতে বলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সূত্র।
ডিমিউচুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট অনুসারে, কৌশলগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্লকড শেয়ারের ৬০ শতাংশ বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এর মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করতে হবে।
এরপর বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার ইনিশিয়াল পাবলিক অফার (আইপিও) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করতে হবে।
অন্যদিকে ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা থাকে স্টক এক্সচেঞ্জ বা ব্রোকারেজ ফার্মের সদস্যদের কাছে।
২০১৬ সাল থেকে কোম্পানিটির আবেদনের ভিত্তিতে প্রতি বছর কৌশলগত বিনিয়োগকারী খোঁজার জন্য সময় বাড়িয়ে আসছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তাদের ২৫ শতাংশ শেয়ার দুই কৌশলগত বিনিয়োগকারী শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে হস্তান্তর করে।
ডিএসই প্রতিটি শেয়ার ২১ টাকা দরে ২৫ শতাংশ শেয়ার ৯৬২ কোটি টাকায় বিক্রি করে।
সিএসই প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৫ সালে। বর্তমানে এর পরিশোধিত মূলধন ৬৩৪.৫২ কোটি টাকা এবং শেয়ারের সংখ্যা ৬৩.৪৫ কোটি। ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য সিএসই তার শেয়ারহোল্ডারদের ৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সিএসইর নিট মুনাফা ছিল ২৮.৩৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৩১.৮৮ কোটি টাকা।
একই সময়ে এর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ০.৪৫ টাকা এবং এর শেয়ার প্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালু ছিল ১১.৭৫ টাকা।