রোজিনা ইসলামকে দ্রুত মুক্তিদানের দাবি জানালেন মার্কিন গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দ
দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে গণমাধ্যম সংগঠনের জাতীয় পর্যায়- ইউএস ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব ও ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব জার্নালিজম ইনস্টিটিউটের নেতৃবৃন্দ।
পিআর নিউজওয়্যারের প্রতিবেদন অনুসারে, তারা আগামী বৃহস্পতিবার নির্ধারিত জামিন শুনানির দিনে রোজিনাকে মুক্তি দিতে আদালতের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট লিসা নিকোল ম্যাথিউস এবং এনপিসি জার্নালিজম ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট এঞ্জেলা গ্রেইলিং কিয়ানে এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, "আন্তর্জাতিক সঙ্কটের এই মুহূর্তে জনস্বার্থ রক্ষায় স্বাধীন সাংবাদিকতা চর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনুসন্ধানী প্রতিবেদকরা জনগণের পক্ষেই কাজ করেন।"
সেখানে আরও বলা হয়, "সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ আসলে কি লুকাতে চাইছেন, তা জানতে বিশ্ববাসীর মধ্যে কৌতূহল বাড়ছে।"
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ভিত্তিক গণমাধ্যম অধিকার গোষ্ঠী- কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস জানায়, ঔপনিবেশিক আমলে প্রণীত যে আইনের ধারায় রোজিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১৪ বছরের জেল বা প্রাণদণ্ডের মতো সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে।
সিপিজে'কে রোজিনার সম্পাদক জানান, তার বিশ্বাস মহামারি চলাকালে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের নানা প্রকার দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা নিয়ে লেখালেখি করায় সংশ্লিষ্টদের আক্রোশের কারণেই রোজিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার রোজিনাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি কক্ষে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রাখা হয়। পরবর্তীতে, পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর তার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরির অভিযোগে মামলা করা হয়।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনার বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালে প্রণীত অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। ১৯২৩ সালের 'অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের' ৩ ও ৫ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের দখলে রাখার অভিযোগও আনা হয়েছে। ৩ ধারা অনুযায়ী অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। আর ৫ ধারা অনুযায়ী সাজা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে অথবা ১৪ বছরের কারাদণ্ড। তবে সর্বনিম্ন সাজা ৩ বছরও হতে পারে।
১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব বিশ্বের পেশাদারী সাংবাদিকদের শীর্ষতম সংগঠন। ক্লাবটির ৩,০০০ সদস্য বিশ্বের প্রথম সাড়ির প্রায় সকল গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যুক্তরাষ্ট্রসহ সমগ্র বিশ্বে মুক্তমত চর্চার স্বাধীনতা নিয়েও সোচ্চার সংগঠনটি।
ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব জার্নালিজম ইনস্টিটিউট আসলে ক্লাবটির একটি অলাভজনক সহযোগী সংস্থা। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণ দেয় এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব নিয়ে কাজ করে।