শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ভোগান্তিতে হাসপাতালগামী মানুষ
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান 'বাংলা ব্লকেড' আন্দোলনে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে হাসপাতালগামী সাধারণ মানুষেরা।
একদিকে যানবাহনের স্বল্পতা, অন্যদিকে মোড়ে মোড়ে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে অসুস্থ মানুষদের। তবে কিছু ক্ষেত্রে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা যানবাহনের ব্যবস্থা করতে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করছেন।
যাত্রাবাড়ির বাসিন্ধা নুরুল আমীন (৭০) চোখের ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন শ্যামলিতে। শ্যামলি থেকে ফেরার পথে বাংলামোটর সিগন্যালে আটকে দেওয়া হয় বাস। ফলে বাধ্য হাটা শুরু করেন তিনি। কিন্তু পরিবাগ না যেতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন নুরুল আমিন।
নুরুল আমিনের নাতনি সুমী (১৫) দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস)-কে বলেন, 'দাদা বেশ কয়েক বছর যাবৎ হাটুতে সমস্যার কারণে একা হাঁটতে পারেন না। মাঝে মধ্যে লাঠিতে ভর করে হাঁটতে বের হন। ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে সব গাড়ি আটকে আছে। তাই ভেবেছিলাম দাদাকে নিয়ে হেঁটে চলে যাব। কিন্তু একটু হাঁটার পর দাদা আর হাঁটতে পারছেন না। তাই এখানে বসে পড়ি।'
ঢাকার দোহার থেকে মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে এসেছেন জোহরা বেগম। কিন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে তাকে ফার্মগেটে নেমে যেতে হয়। উপায় না পেয়ে ছেলেকে নিয়ে পায়ে হেঁটে বারডেম হাসপাতালের দিকে রওনা হয় জোহরা বেগম। কিন্তু বাংলামোটর আসতেই রাস্তায় বসে পড়েন ছেলে সাব্বির হোসেন।
জোহরা বেগম বলেন, 'আমার ছেলেটা মানসিক অসুস্থ। একটু হাঁটা পর কান্না শুরু করে দিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে এখানে দাড়িয়ে আছি।'
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী আসিফ মাহমুদ বলেন, 'বর্তমানে আমাদের আন্দোলন জনগণের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এরপরেও কিছু মানুষের ভোগান্তি আমাদেরকেও কষ্ট দিচ্ছে। কিন্তু আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষকে সহযোগিতা করতে।'