করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ৬৯ শতাংশের দেহেই ওমিক্রন
রাজধানীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ৬৯ শতাংশই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে আক্রান্ত। সোমবার সচিবালয়ে এ কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকায় আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে এই তথ্য জানা গেছে।
তিনি বলেন, "আমরা ঢাকায় যে নমুনা পরীক্ষা এবং জিনোম সিকোয়েন্স করেছি তাতে দেখা গেছে ওমিক্রন (আক্রান্তের) এখন ৬৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যেটা আগে ১৩ শতাংশ ছিল। আমরা গত ১০ দিনের মধ্যেই এই তথ্য পেয়েছি। আমরা মনে করি ঢাকার বাইরেও একই হার হবে।"
এর আগে গত বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেছিলেন কোভিড আক্রান্তদের ১৫-২০ শতাংশই করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। একইদিনে ঢাকার বাইরে প্রথম ওমিক্রন শনাক্তের খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মন্ত্রী জানান, আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় সরকার চিন্তিত। এ কারণে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেন তিনি।
"ডেল্টা এবং ওমিক্রনে আক্রান্তদের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আমরা এ বিষয়ে কিছুটা হলেও চিন্তিত, আতঙ্কিত। গত ১৫ দিনে ১৮ শতাংশে চলে এসেছে শনাক্তের হার। যেভাবে বাড়ছে তাতে শনাক্তের হার ৩০ শতাংশ ছাড়াতে বেশি সময় লাগবে না।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে। এখন যেভাবে বাড়ছে তাতে আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে হাসপাতালে কোনো জায়গা থাকবে না। তখন চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এ কারণে জনগণকে আহবান করছি তারা যেন স্বাস্থ্যবিধি মানে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে।"
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি কোভিড-১৯ এবং এর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উচ্চ সংক্রমণে ঢাকা ও রাঙামাটি জেলাকে 'রেড জোন' হিসেবে চিহিৃত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় সংক্রমণ বাড়লেও ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ায় এখন সারাদেশে সংক্রমণ বাড়ছে। ওমিক্রন মোকাবেলায় চলমান বিধিনিষেধ কঠোরভাবে কার্যকর করা না হলে গত ওয়েভে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে ঢাকার বাইরে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়েছিল এবারও তেমন হবে।
দেশের অন্যতম শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট এবং কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে টিবিএসকে বলেছিলেন, "দৈনিক শনাক্তের হার ইঙ্গিত করছে যে দেশে ভাইরাসের পরিস্থিতি বিপজ্জনক। কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভারত থেকে সীমান্তবর্তী জেলাগুলো দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছিলো এবং সারাদেশে ছড়িয়ে যায়। এবারও ওমিক্রনের প্রভাবে ভারতের পরিস্থিতি খারাপ, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ মোকাবেলায় আরো সতর্ক থাকতে হবে।
শুধু ঢাকায় সংক্রমণ বেশি এই ভুল ধারণা রাখা যাবে না। সারাদেশে সংক্রমণ রোধে কাজ করতে হবে। এখন শতভাগ মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। যতটা সম্ভব বিধিনিষেধ কার্যকর করতে হবে।"
সংক্রমণ মোকাবেলায় গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশে ১১ দফা বিধি-নিষেধ চালু করেছে সরকার।