যশোরে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে দুই জন বাংলাদেশির শরীরে করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট (BA.4/5) শনাক্ত করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ জুন) যশোরের দুইজন আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে সংগৃহীত ভাইরাসের আংশিক (স্পাইক প্রোটিন) জিনোম সিকুয়েন্সের মাধ্যমে নতুন এই উপ-ধরনটি শনাক্ত করে জিনোম সেন্টারের একদল গবেষক।
আক্রান্ত দুজন ব্যক্তিই পুরুষ, একজনের বয়স ৪৪, আরেকজনের ৭৯ বছর।
আক্রান্তদের মধ্যে একজন বুস্টার ডোজ পর্যন্ত অর্থাৎ তিন ডোজ ভ্যাকসিনই নিয়েছে। অন্যজন দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
তাদের একজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আরেকজন বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আক্রান্তদের জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন মৃদু উপসর্গ রয়েছে। তারা উভয়েই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন বলে গবেষকরা ধারণা করছেন।
গবেষক দলটি জানিয়েছে, এই সাব-ভ্যারিয়েন্টের স্পাইক প্রোটিনে ওমিক্রনের মতই মিউটেশন দেখা যায়। তবে তার সাথে এই সাব-ভ্যারিয়েন্টে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মত স্পাইক প্রোটিনের ৪৫২ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডে মিউটেশন থাকে।
এই উপ-ধরনটি দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা সংক্রমণের পঞ্চম ঢেউ এবং সাম্প্রতিককালে ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ এর জন্য দায়ী বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিরাও এর দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। আগামী দিনে এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট বর্তমানে সংক্রমণশীল অন্যান্য সাব-ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য ও জেনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। এজন্য মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই।
"অচিরেই পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স করে এ বিষয়ে আরও তথ্য জানা সম্ভব হবে, এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তকরণের কাজ জিনোম সেন্টারে অব্যাহত থাকবে। "
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত সপ্তাহে দেশে কোভিড রোগীর সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে ২৩%।
২০ দিন পর, গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে কোভিডজনিত কারণে একজনের মৃত্যু হয়, শনাক্ত হয় ৮৭৩ জন। এর আগে গত ৩০ মে একজনের মৃত্যু হয়।
এছাড়াও, সারাদেশে ৮,০২৮টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১০.৮৭% বেড়েছে, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এর আগে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শনাক্তের হার ছিল ১২.২০%। বিগত দিনগুলোতে হাসপাতালে কোভিড রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।