হিজবুল্লাহ নেতা নাসরুল্লাহকে লক্ষ্য করে বৈরুতে বড় বিমান হামলা চালাল ইসরায়েল
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থিত হিজবুল্লাহর কেন্দ্রীয় সদর দপ্তরে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই এ বিমান হামলা চালানো হয়।
এটি ২০০৬ সালের লেবানন যুদ্ধের পর থেকে বৈরুতে এখন পর্যন্ত চালানো সবচেয়ে বড় হামলা। হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত এবং ৯১ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলার সময় ঐ সদর দপ্তরে হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। একজন উচ্চপদস্থ ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, নাসরুল্লাহও হামলার সময় ঐ কম্পাউন্ডে উপস্থিত ছিলেন।
হামলার পর এখনও হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি এবং নাসরুল্লাহর অবস্থা সম্পর্কেও কিছু জানা যায়নি।
নাসরুল্লাহকে বিমান হামলার মাধ্যমে আঘাত করা সম্ভব হয়েছে কিনা– এ ব্যাপারে আইডিএফ এখনও নিশ্চিত নয় বলে ইসরায়েলি সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে, গত ১১ দিনে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান তীব্র সংঘর্ষে লেবাননে এখন পর্যন্ত ৭০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
লেবাননে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারী জানান, ইসরায়েলি বিমানগুলো বৈরুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আকাশপথে টহল দিচ্ছে এবং সেখানে কোনো "অস্ত্রসজ্জিত শত্রু বিমান" অবতরণ করতে দেবে না।
তিনি বলেন, "এটি একটি বেসামরিক বিমানবন্দর, যা বেসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় এবং এটি সেইভাবে থাকতে হবে।"
শুক্রবার রাতেই আইডিএফ বৈরুতের দক্ষিণ অংশের কিছু বাসিন্দাকে তিনটি নির্দিষ্ট ভবনের কাছ থেকে সরে যেতে নির্দেশ দেয়। তাদের দাবি ছিল, হিজবুল্লাহ এসব স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে।
একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলার কয়েক মিনিট আগে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে এ ব্যাপারে অবগত করেছে। কিন্তু দুইজন সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা এটি অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তাদের কোনও পূর্ব সতর্কতা দেওয়া হয়নি।
পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বৈরুতে হামলার বিষয়ে কোনও পূর্বসতর্কতা ছিল না এবং জানিয়েছেন, হামলার সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের সাথে ফোনে কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ ঘোষণা করার দুদিন পরেই এই হামলা চালালো ইসরায়েল।
এর আগে, মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনসহ অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েলকে আরও হামলা এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন কারণ এটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধকে উসকে দিতে পারে।